তরিকুল মোল্লা, বাগেরহাট প্রতিনিধি:।।
শ্রীঘাটে ভূমিদস্যু আওয়াল মীরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন,চাঁদাবাজ, ভূমি দস্যু ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা আওয়াল মীরের বিচার দাবি করেছেন বাগেরহাট সদরের শ্রীঘাট, সদুল্যপুর, রঘুনাথপুর ও উৎকূল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা।
সোমবার (১০ মার্চ) বিকেলে শ্রীঘাট-উৎকূল সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আওয়াল মীরের বিচার দাবি করেন তারা।
আওয়াল মীর শ্রীঘাট এলাকার লোকমান মীরের ছেলে। তার ভাই বাবর আলী মীর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব পদে চাকুরি রত রয়েছেন। মূলত সচিব ভাইয়ের ক্ষমতায় আওয়াল মীর এলাকায় বিভিন্ন অপরাধ ও অপকর্ম চালান বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা আরো জানায়, আওয়াল মীর ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৮ নং ওয়ার্ডের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ১/১১ এর সময় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য দীর্ঘদিন কারাবরণ করে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি, ভূমি ও ঘের দখল এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে ওঠে। এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৩০ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে আহত করেছে। সে বিভিন্ন লোককে এখনো হুমকি দিয়ে বলে তোদের দল এখনো ক্ষমতায় আসে নাই, পারলে আমায় ঠেকাস।
সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জামায়াত- বিএনপি এবং তারেক রহমানকে নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে পোস্ট দিত। উপসচিব ভাইয়ের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বেশ কয়েকটি মৎস্য ঘের দখল করে। এখনো সেই ক্ষমতার দাপট অব্যাহত রেখেছে ।
রবিবার (৯ মার্চ) সকাল ছয়টায় স্থানীয় সাঈদ মীর, শেখ মনসুর, শেখ মাসুম, শেখ আলামিন, জাহিদ মীর, শেখ আব্দুল মান্নান ও শেখ মানসুর'সহ ১০-১২ জন সন্ত্রাসীকে সাথে নিয়ে রঘুনাথপুর এলাকার শেখ মিজানুর রহমানের মৎস্য খামার হইতে আড়াই লক্ষাধিক টাকার চিংড়ি ও সাদা মাছ ধরে নিয়ে যায়।
স্থানীয় বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য শেখ মহিদুল ইসলাম জানায়, এলাকায় নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের হোতা আওয়াল মীর ওয়াপদার খাল দখল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। ১০ মার্চ সকাল ৯ টায় সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত হয়ে লক্ষাধিক টাকার মাছ মারিয়া নিয়ে যায়। সে সময় পারভেজ, মিজান, শহিদুল'সহ কয়েকজনকে লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে।
স্থানীয়রা আরো জানান, সরকারি কর্মকর্তা ভাইয়ের ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ পর্যন্ত স্থানীয় আমিরুন বেগম, আদালত শেখ, লিটন সরদার, শেখ মোসলেম উদ্দিন, শেখ মনসুর আলী, কাওসার শেখ, জামিলা বেগম, শেখ কামরুল ও শান্ত মেম্বার'সহ ৩০ এর অধিক লোককে পিটিয়েছে আওয়াল মীর। থানায় মামলা দিতে গেলে মামলা নেয়না পুলিশ। এতদিন সবাই মুখ বুঝে তার অত্যাচার সহ্য করেছে। এখন তারা আওয়ামী লীগ নেতা আওয়াল মীরের বিচার দাবি করেন।
আওয়াল মীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ব্রেন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বাগেরহাটের বাইরে চিকিৎসাধীন রয়েছি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তার কোন ভিত্তি নাই।
বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উল হাসান জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।