মোঃ সেলিম মিয়া স্বাধীন ৭১।।
কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় এক মর্মস্পর্শী ঘটনায় ৭ বছরের এক শিশুকে ধ/র্ষ/ণের অভিযোগ উঠেছে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। শনিবার (৮ মার্চ) দিবাগত রাতে উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়নের ভুশ্চি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত বৃদ্ধ আবাদ উল্লাহ একই গ্রামের বাসিন্দা।
ঘটনার পর গ্রামের কয়েকজন মাতব্বর শনিবার রাত ১০টায় শিশুটির বাড়িতে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন। বৈঠকে উভয় পক্ষের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত জুরি বোর্ড অভিযুক্ত বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। বৃদ্ধের পক্ষ থেকে ২ হাজার টাকা সালিশের সভাপতির কাছে জমা দেওয়া হয় এবং রায় কার্যকর করা হয়।
তবে, রাত ২টার দিকে যৌথ বাহিনীর একটি টিম সালিশ বৈঠকস্থলে পৌঁছালে সালিশদাররা পালিয়ে যান। শিশুটির মুখে ধ/র্ষ/ণের বর্ণনা শুনে বৃদ্ধ আবাদ উল্লাহকে আটক করা হয়। রবিবার দুপুরে নির্যাতিত শিশুটির মা বাদী হয়ে আবাদ উল্লাহর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, নির্যাতিত শিশুটি স্থানীয় একটি মহিলা মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মাদরাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ভুশ্চি গ্রামের হিরন মিয়ার পরিত্যক্ত রান্নাঘরে শিশুটিকে কুকুর দিয়ে কামড়ানোর ভয় দেখিয়ে ধ/র্ষ/ণ করে আবাদ উল্লাহ। ১০ দিনের ব্যবধানে একইভাবে শিশুটিকে তিনি তিনবার ধ/র্ষ/ণ করেন। গত ৭ মার্চ দুপুরে বাড়ির অন্য শিশুদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে শিশুটির মা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ধ/র্ষ/ণের ঘটনা বেরিয়ে আসে।
শিশুটির চাচা জানান, ধ/র্ষ/ণের অভিযোগের বর্ণনা শুনে গ্রামের মাতব্বররা বৃদ্ধ আবাদ উল্লাহকে সালিশ বৈঠকে নিয়ে আসতে বলেন। শনিবার রাত ১০টায় গ্রামের কয়েকজন যুবক তাকে একটি চায়ের দোকান থেকে ডেকে নিয়ে আসে। বৈঠকে দুই পক্ষের জুরিদাররা একমত হয়ে বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। বৃদ্ধের পক্ষ থেকে ২ হাজার টাকা জমা দেওয়া হয় এবং রায় কার্যকর করা হয়। তবে, রাত ২টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সালিশ বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়। পরে পুলিশ অভিযুক্ত বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
সালিশ বৈঠকে অংশগ্রহণকারী ফজলুর রহমান মিন্টু বলেন, “গ্রামের গণ্যমান্যদের নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করতে শনিবার রাতে সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শিশুটির চিকিৎসা খরচ বাবদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বৃদ্ধের পক্ষ থেকে ২ হাজার টাকা জমা দেওয়া হয় এবং রায় কার্যকর করা হয়। তবে, রাত ২টার দিকে সেনাবাহিনীর টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সালিশ বৈঠক সমাপ্ত হয়ে যায়।”
ভুশ্চি বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপপরিদর্শক রেদোয়ান হোসেন বলেন, “লালমাই আর্মি ক্যাম্পের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর আমরা খবর পেয়ে শিশুটির বাড়িতে যাই। ভিকটিম ও তার পরিবারের বক্তব্য শুনে আমরা অভিযুক্ত বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। আমরা যাওয়ার আগে বাড়ির উঠানে সালিশ বৈঠক চলছিল বলে শুনেছি।”
লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, “৭ বছরের শিশুকে ধ/র্ষ/ণের অভিযোগে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির মা ধ/র্ষ/ণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। ভিকটিমকে মেডিক্যাল চেকআপের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।