শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যার্থ হয়ে হত্যার দায়ে অংবাচিং মারমা প্রকাশ বামং নামে একজনকে রাঙামাটি নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রদান করেছে, বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনাল'র বিচারক এ. ই. এম ইসমাইল হোসেন এ রায় প্রদান করেন।
আদালত সূত্র ও মামলার এজাহারে জানা থেকে জানা গেছে, জেলার চন্দ্রঘোনা থানাধীন ২নং রাইখালী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পূূর্ব কোদালা এলাকার বাসিন্দা সাথুই অং মার্মার ৯ বছর বয়সী তৃতীয় শ্রেণী পড়ুয়া শিশু কন্যা মিতালী মার্মাকে স্থানীয় শিক্ষক অংবাচিং মার্মা প্রকাশ বামং'র কাছে প্রাইভেট পড়াতে দেন।
ঘটনার অর্থাৎ ২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারী রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা থানাধীন বড়খোলা পাড়ার ৯ বছর বয়সী একজন তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী আসামীর বাসায় প্রতিদিনের মতো প্রাইভেট পড়তে যায়।
আসামী অংবাচিং মারমা প্রকাশ বামং অন্য শিক্ষার্থীদেরকে ছুটি দিয়ে ভিকটিমকে রেখে দেয়,এরপর ভিকটিম মিতালী মার্মাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করলে, সে শোর-চিৎকার করতে থাকে।
তখন ভিকটিমের মুখ চেপে ধরে গলায় সুতলি ও কাপড় পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে আসামী, তারপরে লাশটি গুমের উদ্দেশ্যে বস্তায় ভরে ঘরের মাচায় তুলে রাখে। সময় মতো ভিকটিম বাড়ি না ফেরায়, তার পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজতে অংবাচিংয়ের বাসায় যান। তখন আসামী তাদেরকে জানায়, ৩০ মিনিট পড়িয়ে সব ছাত্রীকে ছুটি দিয়ে দেয়।
এরপর থেকে ভিকটিম পরিবার পাড়া- প্রতিবেশির ঘরে ঘরে খোঁজ নিলে, ঘটনা পুরো এলাকায় জানাজানি হয়ে যায় ঘটনার পরদিন (৩ ফেব্রুয়ারী) ভোরে নিহত শিক্ষার্থীর লাশ সরানোর সময় আসামীকে লাশ ভর্তি বস্তাসহ স্থানীয়রা হাতেনাতে আটক করে।
তাকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে পরবর্তীতে নিহত শিক্ষার্থীর পিতা সাথুই অং মারমা বাদী হয়ে অংবাচিং মার্মাকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(২) ও তৎসহ পেনাল কোড ১৮৬০ এর ২০১ ধারায় মামলা নং-০১ ও তারিখ ০৩/০২/২০১৯ইং দায়ের করে। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার ( ১৩ জুন) দুপুরে রাঙামাটি নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনাল এ রায় প্রদান করেছে।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, আসামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড এবং দেড় লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের পিপি সাইফুল ইসলাম অভি বলেন, ভিকটিম পরিবার ন্যায় বিচার পেয়েছে। এ রায়ের মাধ্যম অপরাধীদের কাছে একটা কঠোর ম্যাসেজ গেছে।
আসামী পক্ষের আইনজীবি মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, রায়ে সামাজিক অপরাধ কমবে।