রক্ত জমাটের ৩ লক্ষণ বোঝেন না অনেকেই
স্বাধীন ৭১ ডেস্ক:
মানবদেহের রক্ত সংবহনতন্ত্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো শিরা ও ধমনী। ধমনীর মাধ্যমে অক্সিজেনযুক্ত বিশুদ্ধ রক্ত শরীরের প্রতিটি অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। আর শিরা দেহের দূষিত রক্ত বহন করে নিয়ে যায়।
শরীরের কোনো অংশ কেটে গেলে যদি রক্ত বের হয় তখন শরীরের বিভিন্ন প্রোটিনের সাহায্যে তা জমাট বেঁধে যায়। কিন্তু রক্তে জমাট বাঁধার হার যদি অস্বাভাবিক হয় তবে তা বিপজ্জনক।
শিরা, ধমনী কিংবা পেশিতে রক্ত জমাট বাঁধলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। তখন সেই অংশের কোষগুলো মারা যায় এবং অঙ্গের কার্যক্ষমতা পুরোপুরি কিংবা আংশিক নষ্ট হতে শুরু করে। এই প্রক্রিয়ার নাম থ্রম্বোএম্বলিজম।
শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে ব্যক্তির ধীরে ধীরে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা ও কাশি শুরু হয়। শরীরের বিভিন্ন অংশে থ্রম্বোএম্বলিজম হতে পারে। এতে ব্রেন স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও থাকে। এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
কী কী কারণে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধে?
বয়সজনিত কারণে
অনেকের ক্ষেত্রে বয়সজনিত কারণে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। তবে অল্পবয়সিদেরও এই সমস্যা হতে পারে।
ক্যানসারের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
ক্যানসারের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও এই সমস্যা হতে পারে। অধিক গর্ভনিরোধক ওষুধের ব্যবহারের কারণেও এই ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ক্ষেত্রেও প্রায়ই এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
দীর্ঘদিনের শারীরিক জটিলতা
দীর্ঘদিনের শারীরিক কোনো সমস্যার কারণে যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, প্যারালিসিসের মতো শারীরিক অসুস্থতার কারণে যারা দীর্ঘদিন চলাফেরা করতে পারেন না— তাদের ক্ষেত্রেও থ্রম্বোএম্বলিজমের ঝুঁকি তৈরি হয়।
যেসব উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন?
১। হাতে, পায়ে রক্ত জমাট বাঁধলে সেই অংশে ব্যথা হয়। এই অংশটি তখন ফুলেও যেতে পারে। ওই স্থান ছুঁলে গরম অনুভূতিও হতে পারে। কোনো আঘাত না পেয়েও যদি এমন উপসর্গ দেখা যায় তবে সতর্ক হোন।
২। কখনও কখনও শরীরে কোনো অংশে রক্ত জমাট বাঁধলে সেই অংশটি লাল হয়ে যায়। আবার কখনো বিবর্ণ দেখায়। মূলত শরীরের ঐ অংশে রক্তের অভাব হওয়ার কারণেই ত্বক বিবর্ণ দেখায়। এজন্য শরীরের কোনো অংশ যদি বিবর্ণ দেখায়, সেখানে যদি ব্যথা হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৩। ফুসফুসেও রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। এক্ষেত্রে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যায়। পাশাপাশি দেখা দিতে পারে তীব্র কাশি, কাশির সঙ্গে রক্তপাতের সমস্যা। এমন সমস্যা দেখা দিলে সতর্ক হোন।
এছাড়া মাথায় রক্ত জমাট বাঁধলে মাথা ঘোরানো, মাথা ব্যথা, কথা বলতে সমস্যা, শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এসব দেখা দিলে সতর্ক হোন।